Bangla Jokes | bangla funny jokes | bd jokes | Mojar jokes, Bangla funny Jokes 2020

জোক্স বা কৌতুক হলো মন খারাপের দিনে মন ভালো করার একমাত্র সাথি। জোকস পড়ে আমরা আমাদের মনকে কিছুটা আনন্দ দিতে পারি। জোকস বিনোদনের উৎসও বটে। তাই জোকস পড়ুন এবং হাসুন প্রাণ খুলে। আর হাসলে কিছু শরীর ভালো থাকে, :)

Tags:
Bangla Jokes | bangla funny jokes | bd jokes | Mojar jokes, Bangla funny Jokes 2020, 420 bengali jokes, Gorom jokes bangla, Bangla Jokes Comedy, Bengali jokes pdf, Bengali Adults Jokes PDF, Latest bengali jokes for whatsapp, Best Bangla Jokes of all time, 18 Jokes Bangla SMS, Bangla Funny Jokes video download, Bangla Funny Jokes | বাংলা হাসির জোকস, bangla Bangla jokes sms bengali joke image picture koutuk, 



আরো পড়ুন



(২৬) মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র গোপাল ভাঁড়কে ডেকে বললেন, ‘তোমাকে একটা গোপন কথা বলব, কাউকে বলবে না তো?’ ‘আপনার কোন কথাই আমি মনোযোগ দিয়ে শুনি না’- গোপালের উত্তর!

(২৭) একদিন জরুরী দরকারের জন্য গোপাল খুব সকালে উঠেই রাজদরবারে যাবার কথা। সে স্ত্রীকে বললে, সে ঘুমিয়ে পড়লে স্ত্রী যেন তাকে ডেকে দেয় খুব ভোর বেলায়। ভোর হয়নি। স্বামীর ঘুম আগেই ভেঙ্গে গেল। সে বললে, দেখ তো, বাইরে সূর্য উঠল কিনা আমাকে বেরুতে হবেতাড়াতাড়ি। রাজবাড়িতে ভীষণ দরকার। স্ত্রী বললে ওমা, বাইরে যে অন্ধকার। কি দেখব? গোপাল চেঁচিয়ে বললে অন্ধকারে দেখতে না পাও, আলোটা জ্বেলে নিয়ে দিয়ে দেখলেই তো পারো সূর্য উঠেছে কিনা।

(২৮) গোপাল একবার এক বড় মেলায় বেড়াতে গিয়েছিল। মেলায় গোপাল মেজাজে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এমন সময় একটা উটকো লোক এসে গোপালকি জড়িয়ে ধরলো আচ্ছা দাদা কাশিতে মরলে লোক স্বর্গে যায় আর ব্যাস কাশীতে মরলে নাকি গাধা হয়। কিন্তু যারা কাশি ও ব্যাসকাশীর ঠিক মাঝখানে মরে, তারা কি হয়? আপনি বলতে পারেন দাদা আমার জানতে ইচ্ছে? গোপাল বললে- মশায়, তারা আপনার মতো উটকো হয়। কথা নেই বার্তা নাই চেনা নাই শুনা নাই…. দুম করে জড়িয়ে ধরে প্রশ্ন। একে বলে উটকো লোক।

(২৯) পন্ডিত মশাই একবার মহারাজের কাছে তার ছেলের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে বললেন, আপনার ছেলে মোটেই লেখাপড়া করছে না! পড়ার সময় এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়। আরও লেখাপড়ায় মাথা একেবারেই ঘামায় না। রাজা ছেলের ওপর প্রচন্ড রেগে গিয়ে পন্ডিত মশায়কে বললেন, এবারও যদি পাঠশালায় যায়, বেশ কষে কান টানবেন। মহারাজের কথা শুনে গোপাল সঙ্গে সঙ্গে বলল আপনি যথার্থই বলেছেন, কান টানলেই মাথা আসে। সকলে তখন হেসেই লুটোপুটি।

(৩০) গোপাল এক বাড়িতে প্রতিবেশীর মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ ঠিক করতে গিয়েছিল। বরের বাপ ছেলেকে ডেকে বললেন, ওরে পদ্মলোচন তোকে দেখতে এসেছে রে- একবার এ ঘরে আয়। সকলে তোকে দেখতে চায় বাবা। যে ছেলেটি ঘরে এল, সে ছেলেটি কানা। গোপাল বরের বাবাকে জিজ্ঞেস করলে, এই বর বুঝি? বরের বাবা বললেন, আজ্ঞে হ্যাঁ। তখন গোপাল বললে, কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন? তা বেশ রেখেছেন।

(৩১) গোপাল একজন লোকের কাছে কিছু টাকা ধার নিয়েছিল। সেই পাওনাদার গোপালকে পথের মাঝে পাকড়াও করে বললেন দুদিনের মধ্যে টাকা না দিলে আমি তোমার শ্রাদ্ধ করে ছেড়ে দেব বাছাধন। তখন কেমন মজা পাবে দেখবে। পাওনাদারের কথা শুনে গোপাল মুচকি হেসে বলেন, টাকা ধার দিয়ে ফেরত পাচ্ছেন না, উপরন্তু আমার শ্রাদ্ধের খরচও বহন করতে চাইছেন? ওই কাজটা দাদা আমার ছেলেকে করতে দিন। আমার শ্রাদ্ধ করলে আমি কি স্বর্গ থেকে টাকা নিয়ে আশীর্বাদ করতে আসব নাকি বন্ধু! এই বলে মুচকি মুচকি হাসলে লাগলো।

(৩২) একদিন রাজবাড়ির লোক গোপালকে চুরির দায়ে ফেলার জন্য জোর চেষ্টা করেছিল এবং গোপালকে ধরে এনে, হাকিমের সুমুখে খাড়া করে দিল। হাকিম জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি চুরি করেছ? গোপাল বললে, কেন মিছে কথা বাড়ান। করেছি কিনা সেইটিই তো বিচার করে প্রমাণ করবার ভার আপনার উপরে।

(৩৩) গোপালের বন্ধু গোপালকে জিজ্ঞাসা করে, পশার কি রকম হলো হে? রাজবাড়িতে বেশ কয়েকমাস যাচ্ছ। রোজগার পাতি ভাল হচ্ছে তো? গোপাল বলল, আশ্চর্য রকম। ছমাসে লক্ষ টাকা রোজগার করেছি। বন্ধু হকচকিয়ে গেল একেবারে। বলি, বল কি হে? এ যে আশাতীত। লক্ষ টাকা ভাবার বিষয় বটে। গোপাল বলল, আশাটা অন্যরকম ছিল, স্বীকার করছি। লক্ষ টাকা ব্যাপারটা কি শুনতে চাও? শোন, বন্ধু। প্রথম মাসে মহারাজের কাছে চালাকি করে এক টাকা আদায় করেছিলাম। তারপর এই পাচঁ মাসে শূণ্য পাচিছ। একের পিঠে পাচঁ শূন্য পাচ্ছি। একের পিঠে পাঁচ শূন্য- অর্থাৎ লক্ষ টাকা হলো না? তুমি যদি রোজগার বাড়িয়ে তুলতে চাও আমাকে অনুসরণ করতে পারো।

(৩৪) একদিন এক পূজারী বামুন শালগ্রাম শিলা কাঁধে নিয়ে যজমান বাড়ি যাচ্ছেন, এমন সময়ে পথের মাঝে তাঁর ভয়ানক মলত্যাগের বেগ হল। অগত্যা সেই শালগ্রাম তিনি পাশে গাছের কাছে রেখেই অন্য এক গাছের আড়ালে বসে পড়লেন। সেই পূজারী বামুন রাজবাড়িতেও পুজো করতেন। ব্রাক্ষ্মণের ভাগ্য মন্দ ঠিক সেই সময়ে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র যাচ্ছিলেন সেই পথে। রাজা দেখলেন পূজারী ঠাকুর নারায়ন রেখে গাছেন পিছনে বসে মলত্যাগ করছেন। রাজা পূজারী ঠাকুরকে চিনতে পেরেই চলে গেলেন রাজবাড়িতে। সেই সময় সেই দিয়ে এক প্রতিবেশীও যাচ্ছিল। সে বামুনের কথা রাজাকে বলতে পরদিন পূজারী যখন রাজবাড়িতে পূজা করতে এসেছেন, তখন রাজার আদেশ শুনে তিনি হতবাক। পূজারী শালগ্রাম অপবিত্র করেছেন, এ পাপের শাস্ত্রমত প্রায়শ্চিত্ত তিনি যতদিন না করবেন, ততদিন আর রাজবাড়ির বিগ্রহের পূজা করতে তিনি পারবেন না। এমন কি, পূর্বের মত অন্য যজমানদের বড়ি পূজা অচ্চনা করেছেন তিনি- এমন কথা যদি রাজা জানতে পারেন, তাহলে কঠোর দন্ড দেওয়া হবে পূজারীকে। পূজারী বামুন পূজা না করেই কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেলেন। শালগ্রাম কলুষিত করার প্রায়শ্চিত্ত একট ব্যায় সাধ্যব্যাপার। গরীব বামুন কোথায় পাবেন অত টাকা? টাকা না হলে কি করে হবে। ব্রাক্ষ্মণকে কাঁদতে দেখে সকলেরই দয়া হল তার উপরে, কিন্তু রাজার কাছে তার হয়ে দুকথা বলবার সাহস কারও হলও না। সকলে গোপালের কাছে যেতে বলল, একটা উপায় গোপাল বের করবেই। শেষে ব্রাক্ষ্মণ কেঁদে কেটে ধরলেন গোপালকে। রাজার একান্ত প্রিয়পাত্র ওই গোপাল, রাজাকে যদি কিছু বলতে হয়, তবে গোপালকে দিয়ে বলানোই ভাল। গোপাল ছাড়া বামুনের আর কোনও উপায় নাই। গোপাল বললে, দুচারদিন ধৈর্য্য ধরে থাকুন ঠাকুর মশাই, সুযোগ না এলে কথা কয়ে লাভ হবে না। আমি এর একটা বিহিত করতে পারব আশা করছি। আপনি নিশ্চিন্ত মনে বাড়ি যান। আপনার কথা আমার মনে থাকবে। সময় সুযোগ না হলে রাজাকে বলে কিছুই লাভ হবে না। এই বলে গোপাল বামুন ঠাকুরকে বিদায় দিল তখনকার মত। দুই একদিন পরেই রাজা একদিন ঘোড়ার গাড়িতে বেড়াতে বেরিয়েছেন। গোপালও সঙ্গে আছে। শীতের অপরাহ্ন খানিকটা বৃষ্টিও হয়েছে, গরম শালে সর্বাঙ্গ ঢেকেও তবু রাজ মাঝে মাঝে শীতে কাঁপছেন। এমন সময়ে হঠাৎ গাড়ির ঘোড়াটা মলত্যাগ করলে। অমনি গোপাল হতাশভাবে বলে ফেললে, কি সর্বনাশ। রাজা অবাক হয়ে বললেন, কি সর্বনাশ। গোপাল বললে, সর্বনাশ নয়? এই শীতের সন্ধ্যায় এখন স্মান করে মরতে হবে মহারাজাকেও আমাকেও। গরম মলত্যাগ করে আমাদের অশুচি করে দিলে। এখন কি করা যায় ভেবে দেখুন, মহারাজ। মহারাজ সবিষ্ময়ে বললেন, ঘোড়া মলত্যাগ করেছে, তাতে আমরা আশুচি হবো কেন, আমি ত কিছু বুঝতে পারছি না। গোপাল তখনই উত্তর দিলে, তাহলে ব্রাক্ষ্মণ মলত্যাগ করাতে নারায়ন অশুচি হলেন কেন? ঘোড়াও যেমন বাহন মাত্র, ব্রাক্ষ্মণও তেমনি দেবতার বাহন ছিল মাত্র। তার কি অপরাধ হল বলুন। রাজা বুদ্ধিমান ব্যক্তি তিনি এভাবে বিচার করে দেখেননি। গোপালের কথা শুনে তিনি অনেক চিন্তা করলেন। তারপর বললেন, তুমি যা বললে, সেটা ন্যায়শাস্ত্রের হিসাবে সঙ্গত বটে, কিন্তু হিন্দুর ধর্ম সংষ্কার অনুযায়ী সঙ্গত নয়। মানুষে আর পশুতে সব বিষয়েরইপার্থক্য আছে। যাই হোক ব্রাক্ষ্মণ যে বাধ্য হয়েই এ রকম অবস্থায় মলত্যাগ করেছিল, তা আমি বুঝতে পারছি। প্রায়শ্চিত্ত তাকে করতে হবেই, তবে তার ব্যয় আমি দেবো। তুমি তাকে কালই প্রায়শ্চিত্ত করে আবার যথারীতি পূজা করতে বল। তোমাকে বুদ্ধিতে হারাতে পারব না, তবে নিশ্চয় বামুন ঠাকুর তোমাকে এরজন্য ঘুষ দিয়েছে আমার মনে হচ্ছে। গোপাল কানে হাত দিয়ে বলে, রাম রাম। এ কথা বলবেন না মহারাজ। ঘুষ কেবল মহারাজের কাছে নিই, তাই বলে গরীব মানুষের কাছে ঘুষ নেব সে মতি যেন কোনদিন না হয় হুজুর। এই বামুন ঠাকুর খুব গরিব কিনা। ভগবান আপনার মঙ্গল করুন।

(৩৫) রাজা গোপাল ভাঁড় কে প্রশ্ন করল, গাধা আর তোমার মধ্যে ব্যবধান কতটুকু? গোপাল রাজা থেকে নিজের দুরত্ব টা মেপে তারপর জবাব দিল, বেশি না, মাত্র সাড়ে চার হাত ব্যবধান।

(৩৬) রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সব সভাসদদের সামনে গোপালকে জব্দ করার উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘বুঝলে গোপাল, আমার সাথে তোমার চেহারার কিন্তু দারুণ মিল! তা বাবার শাসনামলে তোমার মা কি এদিকে আসতেন-টাসতেন নাকি?’ গদগদ হয়ে গোপাল বলে, ‘আজ্ঞে না রাজামশাই! তবে মা না এলেও বাবা কিন্তু প্রায়শই আসতেন!’

(৩৭) মিষ্টির দোকানের পাশ দিয়ে যাবার সময় থরে থরে সাজানো মিষ্টি দেখে গোপালের খুব লোভ হয়েছে। কিন্তু ট্যাকে নেই একটি পয়সাও। ভেতরে গোপাল ঢুকে দেখে ময়রার ছোট ছেলেটি বসে আছে। গোপাল শুধায়, ‘কি-রে, তোর বাপ কই?’ ‘পেছনে। বিশ্রাম নিচ্ছে।’ ‘তোর বাপ আমি আমি খুব বন্ধু বুঝলি? আমার নাম মাছি। ক’টা মিষ্টি খাই? তোর বাপ কিচ্ছু মনে করবে না।’ বলেই গোপাল টপাটপ মিষ্টি মুখে পুরতে শুরু করেছে। মিষ্টি নিমিষে শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে ছেলে চেঁচিয়ে বলে বলে, ‘বাবা, মাছি কিন্তু সব মিষ্টি খেয়ে ফেলছে!’ শুনে পেছন থেকে ময়রা বলে, ‘আরে খেতে দে! মাছি আর কট্টুকু খাবে?’

(৩৮) গোপালের তামাক প্রীতি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র মোটেই পছন্দ করতেন না। একদিন গোপালকে সঙ্গে নিয়ে পালকিতে কোথাও যাচ্ছেন, দেখেন তামাক ক্ষেতে এক গাধা চড়ে বেড়াচ্ছে। সেই গাধা ক্ষেতের আগাছা খাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তামাক পাতায় ভুলেও মুখ দিচ্ছে না। সুযোগ পেয়ে রাজা বলেন, ‘দেখেছো হে গোপাল, একটা গাধাও তামাক খায় না!’ শুনে গোপাল বলে, ‘আজ্ঞে রাজা মশাই, তা যা বলেছেন। কেবল গাধারাই তামাক খায় না।’

(৩৯) মন্দিরে ঢুকতে যাবার সময় পেছন থেকে পন্ডিতের বাঁধা, ‘এ তুমি কী করছো গোপাল! মন্দিরে কুকুর নিয়ে ঢুকছো?’ ‘কোথায় কুকুর?’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে গোপাল। ‘এই তো তোমার পেছনে!’ একটি কুকুরের দিকে হাত তুলে দেখায় পন্ডিত। ‘এটি আমার কুকুর নয়!’ ‘তোমার নয় বললেই হলো?’ রাগ দেখিয়ে বলে পন্ডিত, ‘তোমার পেছন পেছনেই তো যাচ্ছে!’ ‘বটে? তা তুমিও তো আমার পেছন পেছন আসছো!’

(৪০) গোপালের জ্যোতিষ চর্চার খ্যাতি শুনে দূর গ্রাম থেকে হাত দেখাতে এসেছেন এক ভদ্রলোক। গোপাল খুব ঘটা করে হাত-টাত দেখে বলে, ‘আপনি তো অতি ভাগ্যবান মশাই! হাতে স্পষ্ট দেখছি আপনার দেহাবসান হবে কাশীতে।’ পূণ্যস্থানে মৃত্যু হবে জেনে ভদ্রলোক খুব খুশি মনে ফিরে গেলেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই ভদ্রলোকের ছেলে এসে উপস্থিত। সে তেড়েফুঁড়ে গোপালকে জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি গননা করে বলেছিলেন বাবার মৃত্যু হবে কাশীতে। কই, উনি তো বাড়িতেই মারা গেলেন?’ গোপাল আমতা আমতা করে বলে, ‘আমি কি তাই বলেছি নাকি? আমি বলতে চেয়েছি উনি কাশতে কাশতে মারা যাবেন। তা সেটা ঠিক বলেছি কি-না? বলুন?’

(৪১) গোপালকে বলছেন রামবাবু, ‘এখানে বাঁদরের বড্ড উৎপাত। তোমাকে তো দেখতে বেশ বাঁদরের মতোই! ওদের দলে তোমাকে ছেড়ে দিলে কি হবে বলতো? তুমি নিশ্চই কখনো বাঁদর দেখনি?’ ‘আজ্ঞে না! আপনার মত বাঁদর আমি আগে আর কক্ষনো দেখিনি!’ গোপালের সোজা-সাপ্টা উত্তর।

(৪২) গোপালের সাথে এক ভদ্রলোকের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন রামবাবু, ‘বুঝলে গোপাল, ইনি হলেন শ্রী বিদ্যাচরণ মিশ্র। তোমার মতো অকাট মূর্খ নন, রীতিমত যাকে বলে বিদ্যের জাহাজ!’ ‘তা জাহাজই যখন ডাঙায় কেনো? সাগরের জলে ভাসিয়ে দিন না!’ গোপালের সরল উত্তর।

(৪৩) একজন বৈরাগী গোপালকে চিনত না। সে গোপালের সামনে এসে বলল, “ঈশ্বরের সেবার জন্য আপনি কিছু চাঁদা দেবেন?” গোপাল কিছু না বলে বৈরাগীকে একটা টাকা দিল। টাকাটা পেয়ে বৈরাগী খুশি হয়ে পথ হাঁটতে লাগল। কিছুটা যেতেই গোপাল তাকে ডাকল, “ও বৈরাগী, একবারটি আমার কাছে এসো।” বৈরাগী খুশিমনে তার কাছে আসলে গোপাল বলল, “তোমার বয়স কত?” “আঠারো আজ্ঞে।” “আমার বয়স পঞ্চান্ন।” “তাতে কি হল?” “এইমাত্র ঈশ্বরের সেবার জন্য যে একটা টাকা নিয়েছ সেটা ফেরত দাও, কারণ তোমার আগেই আমি স্বর্গে যাব এবং ঈশ্বরের সেবার সুবর্ণ সুযোগ পাব।”

(৪৪) গোপাল বেয়াই-বেয়াইনের সাথে বেড়াতে গিয়ে এক ঝোপের আড়ালে প্রস্রাব করতে বসেছে। বেয়াই বলছে, ‘গোপাল উত্তর দিকে মুখ করে প্রস্রাব করছো, ওদিকে মুখ করে প্রস্রাব করা শাস্ত্রে মানা আছে।’ আবার বেয়াইন বলছে, ‘দক্ষিণ দিকে মুখ করে প্রস্রাব করাও শাস্ত্রে মানা।’ শুনে গোপাল বলছে, ‘আমরা ছোট মানুষ, বেয়াই যেই মুখ বললেন সেই মুখেও প্রস্রাব করি, আবার বেয়াইন যেই মুখ বললেন সেই মুখেও করি।’

(৪৫) রামবাবুর সাথে গল্প করতে করতে গোপালের খুব তেষ্টা পেয়েছে। সে ওর ভৃত্যকে ডেকে ঠাস ঠাস তিনটে চড় লাগিয়ে দিয়ে বলছে, ‘যা এক ঘটি জল নিয়ে আয় ঘটি যেনো না ভাঙে।’ ব্যাপার দেখে রামবাবু বলছে, ‘গোপাল, ঘটি ভাঙার আগেই ওকে চড় মেরে বসলে যে?’ গোপাল জবাব দিচ্ছে, ‘আরে ভেঙে ফেলার পর মেরে কি আর লাভ আছে? এর চেয়ে আগেই মেরে দিলাম। সাবধান থাকবে।’

(৪৬) গোপাল যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি। মাথার ওপর গনগনে সূর্য। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গোপাল এক গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে বসল। বেশি গরম লাগায় ফতুয়াটা খুলে পাশে রেখে একটু আয়েশ করে বসল। বসে বিশ্রাম নিতে নিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল, নিজেই জানে না। ঘুম যখন ভাঙল গোপাল দেখে, তার ফতুয়াটা চুরি হয়ে গেছে। হায় হায়! এখন কী হবে! খালি গায়ে তো আর শ্বশুরবাড়ি ওঠা যায় না। কী আর করা। সে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে বলতে লাগল, ‘হে ভগবান, রাস্তায় অন্তত ১০টি মুদ্রা যেন কুড়িয়ে পাই, তাহলে পাঁচ মুদ্রায় আমার জন্য একটা ভালো ফতুয়া কিনতে পারি। আর তোমার জন্য পাঁচটি মুদ্রা মন্দিরে দান করতে পারি•••।’ আর কী আশ্চর্য! ভাবতে ভাবতেই দেখে, রাস্তার ধারে কয়েকটি মুদ্রা পড়ে আছে। খুশি হয়ে উঠল গোপাল, গুনে দেখে পাঁচটি মুদ্রা! গোপাল স্বগত বলে উঠল, ‘হে ভগবান, আমাকে তোমার বিশ্বাস হলো না, নিজের ভাগটা আগেই রেখে দিলে?

(৪৭) গোপাল একবার গ্রামের মোড়ল হয়েছিল। তো একদিন ভোরবেলায় এক লোক এসে ডাকতে লাগল, ‘গোপাল? গোপাল?’ গোপাল ভাঁড় কোনো উত্তর না দিয়ে শুয়েই রইল। এবার লোকটা চিৎকার করে ডাকতে লাগল, ‘মোড়ল সাহেব, মোড়ল সাহেব।’ এবারও গোপাল কোনো কথা না বলে মটকা মেরে শুয়ে রইল। গোপালের বউ ছুটে এসে বলল, ‘কী ব্যাপার, লোকটা মোড়ল সাহেব মোড়ল সাহেব বলে চেঁচিয়ে পড়া মাত করছে, তুমি কিছুই বলছ না!’ গোপাল কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল, ‘আহা, ডাকুক না কিছুক্ষণ, পাড়ার লোকজন জানুক আমি মোড়ল হয়েছি।’

(৪৮) গোপালের ভাইপো আর তার স্ত্রীর মধ্যে ভীষণ ঝগড়া হচ্ছে দেখে গোপাল তাদের থামাতে গেল। গোপালকে দেখে তার ভাইপো বলতে লাগল, ‘দেখুন তো কাকা, আমি আগামী বছর একটা দুধেল গাই কিনব আর তাই শুনে আমার বউ বলছে, সে নাকি গাইয়ের দুধ দিয়ে পায়েস বানিয়ে তার বাপের বাড়ির গুষ্টিকে খাওয়াবে•••।’ গোপাল হাত তুলে তাদের থামাল। ‘আস্তে•••’ ভাইপো থামল। এবার গোপাল ভাঁড় খেঁকিয়ে উঠল, ‘বদমাশ, তোর বউয়ের পায়েস তো পরে•••বাড়ির পিছে আমি যে শাক-সবজির বাগান করেছি, সেগুলো যে তোর গরু খাবে, সে খেয়াল আছে?’

(৪৯) রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দরবারে রাজবৈদ্য নিয়োগ দেওয়া হবে। দেশদেশান্তর থেকে চিকিত্সকেরা এলেন যোগ দিতে। গোপালকে রাজা দায়িত্ব দিলেন চিকিত্সক নির্বাচনের। গোপাল খুশিমনে বসলেন তাঁদের মেধা পরীক্ষায়। —আপনার চিকিত্সালয়ের আশপাশে ভূতের উপদ্রব আছে? —জি আছে। প্রচুর ভূত। ওদের অত্যাচারে ঠিকমতো চিকিত্সা পর্যন্ত করতে পারি না। দিন দিন ওদের সংখ্যা বাড়ছেই। এবার দ্বিতীয় চিকিত্সকের পালা। —আপনার চিকিত্সালয়ের আশপাশে ভূতের উপদ্রব কেমন? —আশ্চর্য, আপনি জানলেন কীভাবে! ওদের জ্বালায় আমি অস্থির। দিন দিন ওদের সংখ্যা বাড়ছেই। এভাবে দেখা গেল সবার চিকিত্সালয়ের আশপাশেই ভূতের উপদ্রব আছে। একজনকে শুধু পাওয়া গেল, যাঁর কোনো ভূতসংক্রান্ত ঝামেলা নেই। গোপাল তাঁকে রাজবৈদ্য নিয়োগ দিলেন। পরে দেখা গেল এই চিকিত্সকই সেরা। রাজাও খুশি। একদিন রাজা ধরলেন গোপালকে। গোপাল বললেন, ‘আজ্ঞে মহারাজ, দেখুন, সবার চিকিত্সাকেন্দ্রের আশপাশে ভূতের উপদ্রব শুধু বাড়ছে আর বাড়ছে। এর অর্থ হলো, তাঁদের রোগী মরে আর ভূতের সংখ্যা বাড়ে…আর যাঁকে নিলাম, তাঁর ওখানে কোনো ভূতের উপদ্রব নেই…অর্থাত্ তাঁর রোগীএকজনও মরে না।


আরো পড়ুন


Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form